আজকে আমি আলোচনা করব ইজরাইল এবং ফিলিস্তিনের ইতিহাস সম্পর্কে
প্রাক প্রাথমিক ইতিহাস:
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ইহুদিদের (بني إسرائيل – বনি ইসরাইল) যাত্রা শুরু হয় নবী ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম)-এর বংশধরদের মধ্য থেকে।
নবী ইব্রাহিম (আঃ)
তাঁকে ইসলাম ধর্মে "আবু আল-আম্বিয়া" (নবীদের পিতা) বলা হয়।
তাঁর দুই পুত্র: ইসমাঈল (আঃ) ও ইসহাক (আঃ)
ইসহাক (আঃ)-এর ছেলে ইয়াকুব (আঃ), যাঁর অপর নাম ইসরাইল
তাই ইয়াকুব (আঃ)-এর সন্তানেরাই হলেন বনি ইসরাইল (ইসরাইলের সন্তান)
নবী মূসা (আঃ) – বনি ইসরাইলদের মুক্তি ও শরিয়তের সূচনা
ইহুদি জাতি তখন মিশরে ফিরআউনের অধীনে ক্রীতদাস ছিল
আল্লাহ মূসা (আঃ)-কে প্রেরণ করেন তাদের মুক্তি দিতে
সাগর চিরে বনি ইসরাইলকে বের করে আনা হয়
এরপর তারা সিনাই মরুভূমিতে গিয়ে তাওরাত (তোরাহ) লাভ করে
এই সময় থেকেই এ জাতির ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আত্মপরিচয় গড়ে ওঠে
ইহুদি” শব্দের উৎপত্তি:
“ইহুদা” ছিল ইয়াকুব (আঃ)-এর এক পুত্র, তাঁর বংশধরদের থেকেই “Yahudi” বা “Jew” শব্দ এসেছে
তবে ধর্মীয় জাতি হিসেবে ইহুদিরা পরিচিতি পায় নবী মূসা (আঃ)-এর শরিয়তের মাধ্যমে
------------------------ ------------------------
কুরআনে বনি ইসরাইলদের অনেক কাহিনি আছে (সূরা আল-বাকারা, সূরা আল-আরাফ, সূরা ত্বাহা ইত্যাদি)
তারা বারবার নবীদের অমান্য করেছে, আবার কখনও তারা ছিল আল্লাহর প্রিয় জাতি
------------------------ ------------------------ -----------------
সিনাই মরুভূমিতে ঘোরাঘুরি (৪০ বছর):
মূসা (আঃ) বনি ইসরাইলকে ফিরআউনের হাত থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন
তারা ফিলিস্তিন (তৎকালীন কনআন) ভূমিতে যেতে ভয় পায়, অমান্য করে
আল্লাহ শাস্তিস্বরূপ তাদের ৪০ বছর সিনাই মরুভূমিতে ঘোরাঘুরির আদেশ দেন (সূরা মায়িদাহ: ২৬)
তারা মরুভূমিতেই ছিল, মন্ন ও সালওয়া খেত।
মূসা (আঃ)-এর মৃত্যুর পর নবী ইয়ুশা (আঃ)-এর নেতৃত্বে বনি ইসরাইল কনআন ভূমি (বর্তমান ফিলিস্তিন ও এর আশপাশ) দখল করে
এখানে তারা ছোট ছোট গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে জেরিকো, হেবরন, শিখিম প্রভৃতি এলাকায় বসতি স্থাপন করে
তারা বহু বছর মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ানোর পর জেরিকো (Jericho) নামক শহর দখল করে নেয়।
এই সময় থেকে ইসরাইলিরা প্রথমবারের মতো নিজেদের জায়গা পায়, ঘর বানায়, চাষাবাদ শুরু করে।
------------------------ ------------------------
ইউশা (আঃ) মারা গেলে নতুন কোন রাজা বা নবী ছিল না।
এ সময় আল্লাহ বিশেষ কিছু লোক পাঠাতেন — "হাকিম" বা "বিচারক" (Judges) — যারা তাদের সঠিক পথে রাখতেন।
কিন্তু বারবার কী হত?
তারা আল্লাহর কথা ভুলে যেত,
বাইরের জাতিদের মতো জীবনযাপন করত,
মূর্তিপূজায় জড়িয়ে যেত।
তখন আল্লাহ শাস্তি দিতেন—দুশমন জাতি আক্রমণ করত।
তারা আবার আল্লাহর কাছে তওবা করত—আল্লাহ আবার একজন বিচারক পাঠাতেন।
এই চক্র কয়েক শতাব্দী ধরে চলেছিল।-- >>(তাওরাত / হিব্রু বাইবেল / ওল্ড টেস্টামেন্ট:
Book of Judges (আদি বই)অধ্যায় 2:10–19)
(ইসলামী ইতিহাসবিদ ও মুফাসসিরগণ যেমন ইবনে কাসির (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "কাসাসুল আম্বিয়া" এবং আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া তে বনি ইসরাইলের এই সময়কে বিশ্লেষণ করেছেন।
সেখানে বলা হয়, ইউশা (আঃ)-এর পর একাধিক 'আলিম ও নেককার ব্যক্তি' ছিলেন যারা জাতিকে সঠিক পথে রাখতেন। তবে তারা নবী ছিলেন না।)
------------------------ ------------------------
এক সময় বনি ইসরাইলেরা বলল:
"আমরা চাই আমাদের একজন রাজা থাকুক, যেমন অন্য জাতিদের আছে!"
নবী সামুয়েল (শামঊইল আঃ)-কে তারা অনুরোধ করল।
আল্লাহ তাদের জন্য "তালুত" (Saul) নামের একজনকে রাজা বানালেন।
কিন্তু অনেকেই তাকে মানতে চায়নি—কারণ সে গরিব ছিল, অভিজাত বংশের না।
তবুও সে আল্লাহর নির্বাচিত, এবং খুব সাহসী ছিল।
==>>
( তুমি কি দেখনি বনি ইসরাইলের সেই দলের কথা, যারা তাদের নবীর পরে বলল: ‘আমাদের জন্য একজন রাজা নিযুক্ত করো, যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি।’
...
তাদের নবী বললেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তালুতকে রাজা নিযুক্ত করেছেন।’
তারা বলল, ‘তালুত কীভাবে আমাদের ওপর রাজত্ব করবে? তার তো ধন-সম্পদ নেই।’
তিনি (নবী) বললেন, ‘আল্লাহ তাকে তোমাদের ওপর বাছাই করেছেন এবং জ্ঞান ও দেহে প্রাচুর্য দিয়েছেন...’"
— [সূরা আল-বাকারা: ২:২৪৬–২৪৭])
তালুত বনাম জালুত – দাউদ (আঃ) এর আগমন:
তালুতের সময়ে এক বিশাল যুদ্ধ হয় “জালুত” (Goliath) নামের এক ভয়ংকর সৈন্যর সাথে।
তখন দাউদ (আঃ) নামে এক তরুণ ছেলেই জালুতকে হত্যা করে দেয়।
আল্লাহ পরে তাঁকেই নবী বানান এবং রাজাও বানান।
------------------------ ------------------------
দাউদ (আঃ) ও সুলাইমান (আঃ) – সোনালী রাজত্ব:
দাউদ (আঃ)-এর শাসনে বনি ইসরাইল একটি শক্তিশালী রাজত্বে পরিণত হয়।
তিনি জেরুজালেমে রাজধানী স্থাপন করেন।
তার ছেলে সুলাইমান (আঃ)-এর সময় আসে সবচেয়ে শান্তিময়, উন্নত, এবং জ্ঞানভিত্তিক রাজত্ব।
তিনি মানুষ, পশু, পাখির ভাষা বুঝতেন
জিনদের দিয়ে কাজ করাতেন (আল্লাহর আদেশে)
তিনি "বায়তুল মাকদিস" (মহান মসজিদ) নির্মাণ করেন
------------------------ ------------------------ ------------------------
সুলাইমান (আঃ)-এর পর জাতির বিভাজন:
সুলাইমান (আঃ) মৃত্যুর পর:
ইহুদি জাতি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়:
উত্তর অংশ: ইসরাইল রাজ্য
দক্ষিণ অংশ: ইহুদা রাজ্য
এই বিভাজনের পর দুই অংশের মধ্যে মারামারি শুরু হয়, দুর্বল হয়ে পড়ে।
(Old Testament: 1 Kings 12
ইসলামী ইতিহাস: কাসাসুল আম্বিয়া ও আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া)
------------------------ ------------------------
উত্তর রাজ্য “ইসরাইল”-এর পতন (Assyrian Captivity):
খ্রিস্টপূর্ব 722 সালে, আসিরিয়ান সাম্রাজ্যের রাজা শালমেনেসার V (Shalmaneser V) ও তার উত্তরসূরি সারগন II (Sargon II) ইসরাইল রাজ্য (উত্তর অংশ) আক্রমণ করে।
রাজধানী সামারিয়া (Samaria) ধ্বংস করে তারা হাজার হাজার ইসরাইলিকে বন্দী করে আসিরিয়া নিয়ে যায়।
বাইবেল রেফারেন্স:
2 Kings (2 রাজা), Chapter 17:6
(ইবনে কাসির (রহঃ) কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থে এই ঘটনাকে ইসরাইলিদের অবাধ্যতার ফল হিসেবে উল্লেখ করেন)
দক্ষিণ রাজ্য “ইহুদা”-র পতন ও বাবিলীয় বন্দিত্ব:
খ্রিস্টপূর্ব 586 সালে, বাবিলের রাজা নবুখাদনেজর (Nebuchadnezzar II) জেরুজালেম আক্রমণ করে:
বায়তুল মাকদিস (First Temple) ধ্বংস করে দেয়
রাজা এবং জনগণকে বন্দী করে নিয়ে যায় বাবিলন (Babylon / বর্তমান ইরাক)-এ
প্রায় ৭০ বছর তারা সেখানে বন্দিত্বে ছিল
==>>
বাইবেল রেফারেন্স:
2 Kings 25:8–11
Jeremiah 39:1–10
Daniel 1:1–6 (দানিয়েল নবীকে এখানেই বন্দী করে নেয়া হয়)
ইসলামী ব্যাখ্যা:
ইবনে কাসির (রহঃ), তাবারি (রহঃ) সহ বহু ঐতিহাসিক এই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন:
তারা বলেন, নবী ইরমিয়াহ (Jeremiah / أرميا) বারবার বনি ইসরাইলকে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু তারা ফিরে আসেনি।
আল্লাহ শাস্তি হিসেবে বাবিলের রাজা বুখতনসর (نبوخذ نصر) কে পাঠান, যিনি বায়তুল মাকদিস ধ্বংস করে দেন।
----------------------------- -------------------------------
পারস্য রাজা কুরুশ (Cyrus the Great) ও ইহুদিদের মুক্তি:
খ্রিস্টপূর্ব 539 BCE সালে পারস্য সম্রাট Cyrus the Great (ফারসি: কুরুশ) বাবিল দখল করে নেয়।
তিনি ইহুদিদের মুক্তি দেন এবং নিজ দেশে ফিরে যেতে ও মন্দির পুনর্নির্মাণ করতে অনুমতি দেন।
বাইবেল রেফারেন্স:
Ezra 1:1–4
এই ঘটনাকে বলা হয় Return from Babylonian Exile (বাবিল বন্দিত্ব থেকে প্রত্যাবর্তন)।
দ্বিতীয় বায়তুল মাকদিস নির্মাণ (Second Temple):
ইহুদিরা জেরুজালেমে ফিরে এসে খ্রিস্টপূর্ব 516 BCE সালের দিকে দ্বিতীয় মন্দির (Second Temple) নির্মাণ করে।
এটি পূর্বের সুলাইমান (আঃ)-এর তৈরি প্রথম মসজিদ এর স্থানে নির্মিত হয়।
রোমান শাসন ও ঈসা (আঃ)-এর আগমন:
রোমানরা জেরুজালেম দখল করে
এ সময় নবী ঈসা (আঃ) আসেন
ইহুদিরা তাঁকে নবী হিসেবে অস্বীকার করে এবং ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হত্যা করতে চায়
এরপর আল্লাহ ঈসা (আঃ)-কে উত্তোলন করেন
চূড়ান্ত ধ্বংস ও ছড়িয়ে পড়া (
)৭০ খ্রিস্টাব্দে:
রোমান জেনারেল টাইটাস আবার জেরুজালেম ধ্বংস করেন
ইহুদিদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়
এরপর শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা ভবঘুরে জাতি হয়ে থাকে: ইউরোপ, আরব, পারস্য, স্পেন, ইত্যাদিতে
প্রাথমিক ইতিহাস:
মধ্যযুগীয় যুগে ইহুদি সম্প্রদায়ের বিকাশ (২০০–১৫০০ খ্রিস্টাব্দ):
ইউরোপে, ইহুদিরা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডে। সেখানে তারা ব্যবসা, চিকিৎসা, ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখে।
স্পেনে, মুসলিম শাসনের সময় ইহুদিরা "গোল্ডেন এজ" উপভোগ করে, যেখানে তারা বিজ্ঞান, দর্শন ও সাহিত্যিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়।
রেফারেন্স:
The Story of the Jews by Simon Schama
-------------------------
ইউরোপে নিপীড়ন ও বিতাড়ন (১৪৯২–১৮০০ খ্রিস্টাব্দ)
১৪৯২ সালে, স্পেনের খ্রিস্টান রাজারা সকল ইহুদিকে দেশত্যাগে বাধ্য করে। অনেক ইহুদি অটোমান সাম্রাজ্যে আশ্রয় নেয়।
ইউরোপে, ইহুদিরা বিভিন্ন সময়ে নিপীড়নের শিকার হয়, যেমন রাশিয়ায় পোগ্রোম ও জার্মানিতে বৈষম্য।
বইয়ের রেফারেন্স:
Zakhor: Jewish History and Jewish Memory by Yosef Hayim Yerushalmi
---------------------------------
আধুনিক যুগে ইহুদি জাতীয়তাবাদ ও ইসরায়েলের জন্ম (১৮০০–১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ)
১৮৯৭ সালে, থিওডোর হার্জেল "Zionism" আন্দোলনের সূচনা করেন, যার লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।
মাধ্যমিক ইতিহাস:
ইউরোপে ইহুদি বিরোধিতা (Anti-Semitism)
ইহুদি জনগণের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও নিপীড়ন এই সময়ে রাশিয়া, ফ্রান্স, এবং পূর্ব ইউরোপে তীব্র হয়ে ওঠে।
ড্রেইফাস মামলা (Dreyfus Affair), ১৮৯৪-১৯০৬ — ফ্রান্সে ইহুদি সেনা কর্মকর্তা আলফ্রেড ড্রেইফাসকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।
এতে ইউরোপজুড়ে ইহুদি অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
ইহুদি অভিবাসন (Aliyah)
অনেক ইহুদি পূর্ব ইউরোপ থেকে প্যালেস্টাইন, আমেরিকা ও ব্রিটেনে অভিবাসন শুরু করেন।
First Aliyah (১৮৮২–১৯০৩) এবং Second Aliyah (১৯০৪–১৯১৪)— মূলত রাশিয়া, পোল্যান্ড ও ইয়েমেন থেকে ইহুদিদের আগমন ঘটে প্যালেস্টাইনে।
তারা কৃষি বসতি স্থাপন করে
১৯১৪–১৯১৮: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও ইহুদি ভূরাজনীতি
ব্রিটিশদের প্রতিশ্রুতি ও প্যালেস্টাইনের ভূমিকা
যুদ্ধকালে ইহুদি ও আরবদের সমর্থন পেতে ব্রিটিশরা একইসাথে Balfour Declaration (১৯১৭) জারি করে:
এতে বলা হয়: “His Majesty's Government view with favour the establishment in Palestine of a national home for the Jewish people…”
এটি ইহুদি ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়, কারণ প্রথমবারের মতো একটি বড় সাম্রাজ্য ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের স্বীকৃতি দেয়।
অটোমান শাসনের অবসান ও ব্রিটিশ ম্যান্ডেট
১৯১৭ সালে, ব্রিটিশ বাহিনী জেরুজালেম দখল করে নেয়।
১৯২০ সালে, লীগ অব নেশনস প্যালেস্টাইনকে ব্রিটিশদের ম্যান্ডেট হিসেবে ঘোষণা করে।
এটি ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকে।
ইহুদি অভিবাসনের বৃদ্ধি (Third Aliyah)
১৯১৯–১৯২৩: পূর্ব ইউরোপের বিপ্লব, গৃহযুদ্ধ ও কমিউনিস্ট নিপীড়নের কারণে আরও অনেক ইহুদি প্যালেস্টাইনে চলে আসে।
তৃতীয় আলিয়াহের সময় আধুনিক হিব্রু ভাষা, শ্রমিক আন্দোলন (Histadrut), ও সামন্তবাদবিরোধী আন্দোলনের বিস্তার ঘটে।
নাৎসি পার্টির উত্থান
১৯২০–৩০ দশকে, হিটলারের নেতৃত্বে National Socialist (Nazi) পার্টি ইহুদি বিদ্বেষকে মূল রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
হিটলারের লেখা বই Mein Kampf (১৯২৫)–এ ইহুদি জাতির বিরুদ্ধে তার ঘৃণা স্পষ্ট।
Holocaust বা Shoah (১৯৪১–১৯৪৫)
হিটলারের “Final Solution”–এর আওতায় ৬০ লক্ষ ইহুদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
যুদ্ধোত্তর শরণার্থী সংকট
লক্ষ লক্ষ ইহুদি ইউরোপে গৃহহীন, ক্যাম্পে বসবাস করছিল।
বিশ্বব্যাপী ইহুদি অভিবাসনের জন্য সমর্থন বেড়ে যায়।
▶ ব্রিটিশ প্যালেস্টাইন ম্যান্ডেটের সমাপ্তি
ব্রিটিশরা প্যালেস্টাইনের ভবিষ্যত নিয়ে জাতিসংঘে দায়িত্ব হস্তান্তর করে।
▶ জাতিসংঘের প্রস্তাব (UN Partition Plan, ১৯৪৭)
প্যালেস্টাইনকে দুটি রাষ্ট্রে ভাগ করার প্রস্তাব (ইহুদি ও আরব রাষ্ট্র)।
ইহুদিরা গ্রহণ করে, আরবরা প্রত্যাখ্যান করে।
ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা
ডেভিড বেন গুরিয়ন ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।
আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ ও শরণার্থী সংকট (১৯৪৮–১৯৭৩)
▶ ১৯৪৮ এর প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ
মিসর, জর্ডান, সিরিয়া, ইরাক ইত্যাদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
ইসরায়েল জয়লাভ করে এবং অতিরিক্ত জমি দখল করে।
▶ Nakba (النکبة) — "বিপর্যয়"
প্রায় ৭ লক্ষ ফিলিস্তিনি আশ্রয়হীন হয়ে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যায়।
পরবর্তী যুদ্ধসমূহ:
১৯৫৬: সুয়েজ যুদ্ধ
১৯৬৭: ছয় দিনের যুদ্ধ (Six-Day War)
ইসরায়েল গাজা, পশ্চিম তীর, গোলান হাইটস ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে।
১৯৭৩: ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধ
এর পরের ইতিহাস মোটামুটি সকলেরই জানা।
কোন সিদ্ধান্তের উপর আসা আমি পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম।